সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০২০

কবিতা : অনিরুদ্ধ সুব্রত



                        প্রিয় মৌসুমী বায়ু 
                            অনিরুদ্ধ সুব্রত 

পশ্চিমি ঝঞ্ঝা-ক্ষুব্ধ দিন গুলোর কথা এখন ভুলে যাচ্ছি 
পলাশের রক্ত-আগুনের তাপে সেই তো শেষ বার সেঁকে নিয়েছি
বসন্তের বাতাস বরাবর জ্যোস্না-রাতের বাঁশি বেজেছে কতই
মেহগনি সংবেদে ফিরেছে আবার, হিমালয় ছেড়ে গৃহী-সন্ন্যাসীর মতোই
 উদাসীন শূন্য চৈত্র-মাঠ আবার ধরেছে বায়না, নিজস্ব ফসল-গর্ভ-গান 
দূরে একটি দু'টি খেজুর গাছের হৃদয় আকাশের গায় কাঁটা ফুটিয়ে দেয় ।

 
   ভাবছিলাম নাম হোক 'দুপুরবেলা' আমার, বিশেষত এই বয়সে মানায়
শরীরের নাম গ্রীষ্মকাল। ঘেমে নেয়ে কাব্য কি হয়, অস্বস্তির চালসে গায়
ফুটো ফাটা ত্রিপল ঢাকা ঘুন ধরা সেই বাঁশের খুঁটি। চেষ্টা চলে পরিপাটি 
তবুও ফাঁটে চাষের মাটি,রসের অভাব,শুকিয়ে আসে গভীর থেকে বুক অবধি।

একটু একটু থমকে বাতাস, অনেকটা শীত শীতল থেকে,ধুলো ধোঁয়ার পথ
কখন দেখি অসহ্য বোধ, গুমোট হয়ে সমস্ত ভাব, মাথায় ওঠে সব উত্তাপ ।
মাঝ দুপুরের আগুনে খাগ দু'চোখ শুধু ধূ ধূ,কাজের মানুষ, মগডালে এক ঘুঘু ।
সহ্য হয় না কঠিন পাচ্য, না-হজম কতই স্বাদ,অসাধ্য সাধ্য করার তবুও সেই সাধ
অনবরত ঘামে ভেজে সহায় যত, ভিজে ওঠে নাক, পিছলে যায় চশমাটা আর
পিছিয়ে পড়ে হাত ।

তবুও বলি ফিরিস্তি এ সব, দুপুরবেলা পাল্টে শরীরের নাম যে গ্রীষ্মকাল।
তাপ সয়ে যাক,বন্ধ বাতাস তাও সয়ে যাক, এখানে জমুক গভীর নিম্নচাপ ।
সকাল ফিরে কী করে পাবে, বাড়ি তোমার নিরক্ষীয়--- বদলে নেবে ? 
কোন সকাশে কে-ই বা আছে, জলের কাছে ঘর, এখানে শুধুই বালির ঝড়।
প্রিয় আমার মৌসুমী বায়ু, এই রোদ্দুর এই দুপুরে, এক পশলা বৃষ্টি নামাবে ?

                                                                                

কোন মন্তব্য নেই: