এপ্রিল সংখ্যা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
এপ্রিল সংখ্যা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০

এপ্রিল সংখ্যা প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র

-:প্রচ্ছদ:-
-:সূচিপত্র:-


কবিতা : অনুপম চক্রবর্তী


            সব আশ্চর্য চিনে রাখা ভালো
            তোমার সাজানো ভুল থেকে
            টুপ করে খসে পড়ে দেওয়াল
            আমি ফাঁকা মাঠ হই নীরবে।

            আর কোন গন্তব্য নেই
           টেলিফোনের ফ্রেমে আটকে জীবন
            মৃত্যুর রিংটোন এসে বুকে বাজে
           পরস্পর ছুঁয়ে থাকে জন্মান্তর।

           এই দূরত্ব, আঙুলের বিভেদ
           মেপে রাখে সব সমঝোতা।


কবিতা : সৌরভ বর্ধন


 
মশান চক্রে আমি স্থির হন্যে ব্যাঘ্রের মতো অবশ হয়ে আছি
নৃত্য-যোনির ভেতর দীর্ঘায়ু ফুটে বেরোচ্ছে আমার পদ্মকোষ
আমার নাদের অন্তরালে পরিশ্রমের পাল্টা ল্যাকটিক আমি
কখনও ছুঁইনি তাই জারিত বিশ্রাম মুক্তি নামের শাপ দিয়েছে
ফলত বিদ্রোহী অন্ধকারের কুটো-চামড়া খুলে উড়ছে রাংতা
পরতে পরতে ঝিমিয়ে আসছে কাব্যকল্পদ্রুম আর ধ্যানস্থ ধী
আমার এক আদি-অস্ত্রাল সন্তান এত এত পাখি বলতে পারে
যে সব মৎস্য উড়ে যায় মোক্ষ নামের অপরাধবোধ গিলে...
নির্বাণ মানে শূন্য-বিজ্ঞান-মহাসুখ হওয়ায় আমি আবার ফিরে
যাই শামুকের উৎসে দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রহ করি শম্বুক-খোল
হাড়গোড়হীন সে এক যুগপৎ সুপ্তহত্যার হাত ধরে নিজেদের
মূলাধার চেটে নিই অনির্বাণ ভরকেন্দ্রের দৌলতে যুদ্ধ ঘোষণা
করি অনাক্রম্যতার সলতের নীল চোখে কর্ণিয়া রাখি রোজ
দুহাতে চন্দ্রাহত শাকসবজি নিয়ে অগ্রন্থিত পুস্তকাদি সাজাই

কবিতা : অনুশ্রীতা বিশ্বাস

  
   প্রভাতী সুরের গানের  দোলায় -
               
   আকাশ ভরা সূর্যের হাসির মতো 
   তোমার আমার জীবনে আগমন। 

   আগমন টা ছিল সন্ধ্যা। 
   সূর্যের আলো রশ্মি যখন আমাকে দাহ করছে 
   তুমি চন্দ্রিমার প্রেমময় আগমন  ঘটালে। 

   তুমি শুধু তোমার বলো নি? 
   তুমি  আমাদের বুঝিয়েছ। 
   তুমি তুলি দিয়ে   - 
   আমার ফাঁকা ক্যানভাসে 
   রঙের বর্ষণ করেছ ।

   হৃদয়ের ক্ষুদা তুমি জাগিয়াছো। 
   প্রেমিকস্বতা তুমি -
   প্রেমিকার আত্মঅহংকার  দাতা। 

   পিপাসিত ওষ্ঠে তুমি    -
   নীলকণ্ঠের মতো পতি পরমেশ্বর। 

   মানবী আমি তোমার তৃষ্ণায়ে  তৃষ্ণার্থ। 

   হৃদয়ের বৈশাখী জোছনার তুমি --
   কালবৈশাখী। 

কবিতা : দেবস্মিতা দাস


আরও একটা ক্ষুধার্ত রাত নামে,
হিংস্র পোকামাকড়ের কামনার বলি হওয়া এক গোলাপ
আজও লাল হয়ে ফুটে আছে ।
দূর থেকে ভেসে আসে শিকারির জালে ফুলের প্রলাপ ।

 এই বুঝি তার পালা এল ,
শিশিরসিক্ত উজ্জ্বল পাপড়ি এই বুঝি আঁধার
হয়ে শুকনো বৃন্তে মিলালো ।
ঐ আসে তার জীবনের কালো মেঘের আষাঢ় ।
কুঁড়িতে ধর্ষিত হওয়া আরও একটা ফুলের উপসংহারে ,
খুঁজে পাই ভূমিকা না হওয়া এক নিষ্পাপ বালিকারে ।

কবিতা : শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস


সমুদ্র ভর্তি এক গ্লাস জল। 

নুনের ছিটা দেওয়া মন- আগুনের ভেতর থেকে
গলগল করে কেঁদে উঠলো ঘরের ধোঁয়া।  

রংমহলের টাওয়ার ফেল করছে। 

গলগণ্ড
আকাশে মেঘ না থাকলে,
চেনা আঁচলের গিঁটে বাঁধা অসুখের পাশে
তোমার আমার কথা হবে পৃথিবীর আশ্চর্য শহরের যে কোনো জায়গায় দাঁড়িয়ে।     

কবিতা : সাত্যকি


    আজ অনেকগুলো দিন পরে 
    আবার আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছে করছে কথাদের
    রোজ একটু একটু করে হারাচ্ছি 
    চেনা মানুষের শব্দ ভিড় গন্ধ 
    পরিমিত সব হারাচ্ছে এই বিকেলের রোদে
    দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি 
    চেনা পৃথিবী বদলাচ্ছে কি দ্রুত 
   বসন্ত ফিকে হচ্ছে চৈত্র অবসানে!

কবিতা : অর্ঘ্য কমল পাত্র


            মোটরবাইকে লং ড্রাইভে গিয়ে
            ছেলেটি দেখেছে—
            কীভাবে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং,
            হলুদ ল্যাম্পপোস্ট আর
           ওয়েলকাম লেখা পোস্টার
            ছেড়ে চলে যায় সকলকে...

           তাই ছেলেটি গাছের নীচে বসে
           সিগারেট খাচ্ছে আর ভাবছে
           —এই বসন্তে, কোনো রং
           সে মাখবে না

কবিতা : অরুণাভ নিয়োগী


   নিজেকে গলিয়ে নিই জামার ভিতর 
   আকন্ঠ গিলে নিই তোমার উপদেশ 
   হাঁটতে হাঁটতে হাঁটুকে ছুঁয়ে কথা বলি চৌরাস্তায়। 

   যেভাবে খালে ভিজে গেছে আমাদের শৈশব 
  সেভাবেই ডুবতে দেখে জলকে আপন করেছে 
  একা একা মজে যাওয়া নদী। 

   বাঁধানো স্নানের ঘাট যেভাবে বর্ষায় ভেসে গেছে
  সেভাবেই ভাসতে ভাসতে একটা আস্ত নদী 
  আমার হাতের তালুতে মাথা রেখেছে ! 

      

কবিতা : সৌরভ মান্না


আর কিছু ভাঙা অসম্ভব -
ভাঙতে-ভাঙতে,গড়ার প্রক্রিয়াটাই 
অবাধে লুপ্ত হয়েছে ;
প্রতিদিন যেন রক্তপান করে চলেছি !
তোমাদের ক্ষোভ,ক্রোধ,বিরহ,বিচ্ছেদ ,
লাল চোখ রাঙানী 
এসবের নির্দয় অশিক্ষায় ,বেঁধোনা -
কিছু ভাইরাসহীন ভালোবাসায় 
কটাদিন নয়,নির্মোহে বেঁচে থাকি।

কবিতা : অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়


              সোনালী রঙ মেহগিনি পাতা গলে
              ঢলে পড়ছে পশ্চিমে
              লালধুলেবালি ডানা মেলে
              উড়ে যায় ময়ূরাক্ষী জলপথে
              মধ্যরাত পর্যন্ত জেগে থাকা
              এমন সময় না- বলা প্রেম
              অনেক কথা বলে যেতে চায়
              এলোমেলো হয়ে যায় মুহূর্ত
              কেটে যায় ঘুড়ির মতন দিগভ্রান্ত
              চলে যায় শূন্যে..…...

কবিতা : হামিদুল ইসলাম


বসন্তের ছোঁয়ায় পাততাড়ি গুণি এবেলা ওবেলা 
নজরবন্দি পলাশ শিমূল
নৈঃশব্দের বাতাবরণ ভেঙে বেরিয়ে আসে এক মায়াবী মুখ 
অস্থিরতা তার শরীর জুড়ে 
তার চোখের কোণে স্নান সারে খরস্রোতা নদী  ।।

অস্বচ্ছ ভাবনায় ভাঙি ছবির দেয়াল 
আগুনে পোড়াই সমস্ত অনুভূতি 
তবু দেখি তার অনর্থক ফেরার পথে আমার অসম্ভব ব‍্যাকুলতা  
নিজের অস্তিত্ব অনুভব করি 
এক বিশাল ময়াল মৃত‍্যুকোষ গিলে খায় নিরবধি  ।।

শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০

কবিতা : বদরুদ্দোজা শেখু


ঘুমঘোরে জেগে উঠি , ঝিরিঝিরি ভোরের মলয়
শিরশিরে আমেজ দ্যায়, দেহমন বিরহী হৃদয়
আপ্লুত নন্দিত হয় , পাখিরাও শুনি অনুভব করে এই প্রসন্নতা , মৃদু মৃদু সুখী কলরব
ইতস্ততঃ ভেসে আসে, আশপাশে নীরব স্থবির
ঘরবাড়িগুলো ঢুলে দেউড়ির দরমা-টাটির
খিল তুলে, অনাবিল শান্তির প্রহর ঘুরে যায়
জগতের বিপন্ন সত্ত্বার  আতঙ্কিত অসহায়
জনপদ জুড়ে জুড়ে, ফুঁড়ে উঠে প্রাগৈতিহাসিক
মানব-সভ্যতা, প্রত্ন খায় বিশ্বত্রাস করোণা-বৃশ্চিক !!

কবিতা : মিঠুন রায়

         তোমার অতসীপ্রেম আমাকে মুগ্ধ করেছে অনেক আগেই,
         রান্নাঘরে বাটা হলুদের মতো তোমার মুখশ্রী,
         সবুজ বণানী জুড়ে ফুটে উঠেছে শ্বাশত প্রেমের শতদল।
         আমি তোমার প্রেমিক নাকি অন‍্য কেউ,জানিনা।
         বৃষ্টির সোঁদা গন্ধে সমোহিত হয়ে পড়ি অপ্রত‍্যাশিত,
         প্রেমের মোহে তোমার সহস্র ভুলেও খুঁজে পাই বিবর্ণ অজ্ঞানতা,
         শুধু স্বপ্নের সুতোয় নক্সীকাঁথা বুনি।

কবিতা : অরূপ সরকার


      এ ছাদ ও ছাদ পায়চারি করে রোদ।
      বাডির  উঠানে চুল খুলে বসে নদী
      বিস্মৃতিতে  এটাই ভুলে গেছি
     শেষবার কবে কেঁদেছিল হৃদি ,

     ঘনিয়ে এসেছে মনের  নিম্নচাপ
     জ্বর মেপে নেয়  কপালের উত্তাপ,
     মন বুঝে নেয় নির্বাক  সংলাপ।

     মেঘ চলে যায় পাশের পাড়ার দিকে
     গান শোনায় অভিমানী সন্ন্যাসী।
     আমি আজও হেঁটে পার হয়ে যাই  কত শত 
     অভিশাপ রাশি।

কবিতা : ডঃ চন্দ্রকান্ত চক্রবর্তী

 
   রাত-ঘুম ভেঙে দু-লাইন লিখে ফেলার পর
   বড়ো প্রশান্তি এসে ঘিরে ধরে
  নৈ:শব্দ হাতড়ে তখন স্বপ্ন আছড়ে চৌচির করি
  দু:স্বপ্নরা পাড়ি জমায় অন্যত্র! 
  এক আঁধার রাতই যথেষ্ট মনে হয় 
  আসল মুক্তোর ছটায় নিজেকে খুঁজে পেয়ে
  আমি দাঁড়াই এসে অমিতপরাক্রমী--

  হে আর্কিমিডিস, তুমি বার বার আসো,
  ফিরে ফিরে আসো 
   তবেই না সৃষ্টি বাঁচে শাশ্বতকাল !

কবিতা : প্রণব কুমার চক্রবর্তী


উপত্যকা জুড়ে বইছে এক নোতুন হাওয়া  .......

এঁকে দিচ্ছে মাটির বুকে কান্না ভেজা মৃত্যুর                                       একটা সুন্দর হিম-শীতলতা 
ক্রমশ নিশ্চুপ হয়ে পড়ছে উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনা 
শঙ্কিত সব গার্হস্থ  আলোচনা আর
                                      সকাল-সন্ধ্যার প্রার্থনা  
শূন্যতার করিডরে তৈরি হওয়া 
নোতুন এক যন্ত্রণার ব্যাকরণ 
সূর্য এবং চন্দ্রের উত্তাপ মেখে বৃষ্টি হয়ে 
নেমে আসছে পৃথিবীর বুকে ......

শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০

কবিতা : হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়



নিথর দুপুরের গায়ে তুমি সারাদিন মিশে থাকো
নৈঃশব্দ্যের ঠোঁট থেকে যে অবাধ চুম্বন ঝরে পড়ে
তার আলোকিত পেলবতা তোমার শরীর সম্পদে

স্থির হয়ে পান করি লালারস
স্পর্শে উন্মাদ হই তোমার উদ্দাম মুখরতা

দুজনেই ঘুমিয়ে
তবুও চেনা সমীকরণের
গোপনীয় ইঙ্গিতে স্পষ্ট আমাদের উদ্দাম লীলা

আমরা আমৃত্যু হেঁটে যাব।

অনুগল্প : পৌলমী সরকার

 একটা চড়, সিদ্ধান্তটা নিতে খুব একটা দেরি করেনি মেয়েটি, হাতের কাছেই পেয়েছিল উপকরণ; ঠাকুমার ঘুমের ওষুধের শিশিটি। মেয়ের অধঃপতনের খবর পেয়েছিল শিল্পী বাবা। সে সমস্ত সত্তা বিকিয়ে দিয়েছে সামান্য কটা টাকার জন্য। ন্যুড মডেল হয়ে টাকা ইনকাম করেছে। এমন মেয়ের বাবা হয়ে বেঁচে থাকার কষ্টে তিনি বাঁচতে চান না একমুহূর্ত... বিছানায় শুয়ে থাক

অনুগল্প : প্রতিমা ভট্টাচার্য মণ্ডল

আজ খুব ভোরেই ঘুম ভাঙ্গলো ঊর্মিলা দেবীর,যদিও তিনি রোজ সকাল সকাল বিছানা ছাড়েন।তারাতারি স্নান সেরে ঠাকুরের কাছে জোর হাত করে বললেন-"ঠাকুর আমার বাবাই এর আজ চল্লিশতম জন্মদিন ওকে ভালো রেখো, সুখে শান্তিতে ভরিয়ে দিয়ো।" মনে মনে ভাবতে লাগলেন ছোট বেলায় নিজেই পায়েস রান্না করে ঠাকুরকে নিবেদন করে ছেলের মুখে দিতেন।এখন সে উপায় নেই।বাবাই এর বাবা মারা গেছেন আট বছর হতে চললো, তার পরের বছরই হরিদ্বার বেরাতে নিয়ে আসে বাবাই আর বৌমা,সঙ্গে দু'বছরের নাতি।তারপর সেই যে হরিদ্বারের ঘাটে রেখে চলে গেলো আর এলোনা। দেখতে দেখতে ছয় বছর পার হয়ে গেলো ঊর্মিলা দেবী জানেন তাঁরা আর কোনদিন আসবে না।