জুন সংখ্যা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
জুন সংখ্যা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ২৯ জুন, ২০১৯

                      অনুপম চক্রবর্ত্তী

 জন্ম : ১৯৮৬ 

জন্মস্থান : মালঞ্চা, দক্ষিন দিনাজপুর

পেশা : স্কুল শিক্ষক

শখ : লেখালেখি ও গানশোনা

প্রিয় কবি : অনেক কবির কবিতাই ভালো লাগে । নির্দিষ্ট ভাবে বলা খুব মুশকিল । 

লেখালেখি শুরু : ছোটবেলা থেকেই বিচ্ছিন্ন ভাবে । তবে ২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত লিখতে আসা । 

পত্র পত্রিকা : মধ্যবর্তী পত্রিকায় নিয়মিত ভাবে লেখালেখি করেন । এছাড়াও আনন্দ বাজার, দেশ, উনিশ-কুড়ি, স্রোত, শব্দ হরিণ এবং অনলাইন ম্যাগাজিন - দৈনিক বজ্রকন্ঠ , সাহিত্য কালচার, দহর প্রভৃতি পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত হয়েছে । 

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : তুই আমাকে যা বলবি 

বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০১৯


                 জুন সংখ্যার সূচিপত্র  

                   

  "মে সংখ্যার কবি" অনুপম চক্রবর্ত্তী


কবিতা :

             কুনাল গোস্বামী,অর্পিতা ঘোষ, রীতা রায়, অনুপম চক্রবর্ত্তী, জ্যোতির্ময় মুখার্জি, সুতনু হালদার , আবির্ভাব ভট্টাচার্য, তৈমুর খান, সৌরভ ঘোষ ।


অনুগল্প :

            কৌশিক ডাম, শ্যামল কুমার রায়,সৌমেন সরকার ।

   শুধু একখানা দ...

       কুনাল গোস্বামী 

কুয়াশার মতো জমে আছে নিকোটিনের ধোঁয়া
টলমল কলমের ডগায় বিন্দু বিন্দু কালির দাগ
কবিতার শব্দগুলো থেকে শবটুকু নিয়ে গেলে
ফেলে গেলে শুধু একখানা দ...
সেই ঘূর্ণায়মান "দ"য়ের চোরা স্রোতে
ভাসিয়ে নিয়ে গেল অতীতের মায়াবী প্রেমিক'টারে
দূরে ঐ বালুকা তটে ফেলে গেলে কেবল নেশাগ্রস্ত কবি
যে মদের সাথে আস্ত গিলে খেয়েছে প্রেমিকের আচ্ছাদন 
কবি তুমি প্রেমিক হতে চেওনা আর
ঘুলঘুলি দিয়ে মেখনা আর ভোরের একমুঠো আবীর
থাকনা প্রেম প্রেমের মতো,প্রেয়সীর বুকে জড়িয়ে
প্রেয়সী নাইবা হলো তোমার,কবিতায় থাকুক সে কবির মনের মতো হয়ে!!

         অকৃতজ্ঞ

           তৈমুর খান 

মৃত্যু ছলকাচ্ছে
                 আর্তনাদ পড়ে আছে
       রক্তে ভেজা মাটি
                                   কোন্ সকাল 
আজ ?
নিষ্ঠুর হাসাহাসির ভেতর কোথাও দাঁড়াবার জায়গা নেই
সহানুভূতি পালিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের নির্বাসনে

বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৯

       ছুঁয়ে  দেবো 

    আবির্ভাব ভট্টাচার্য 


শিশিরের মতো স্বচ্ছতায় ছুঁয়ে দেবো একবার।
প্রতিদিন কতকিছু ছুঁয়ে যাই, অবশ চেতনায়, ইচ্ছায় – অনিচ্ছায়
বাজারের থলের ভার, মেছনীর ফেরত দেওয়া ন্যাতানো দশ টাকার নোটের আর্দ্রতা
খবরের কাগজের সংক্রমণ, ওষুধের পাতার আলিঙ্গন
এমনকি কম্পিউটার কি-বোর্ডের মোহ -
এই সবকিছু পেরিয়ে এসে
ভীষণ অন্যরকম, অমলিন ছুঁয়ে দেবো তোমায়।
গভীর রাত্রে ঘুমচোখে যেভাবে ছুঁয়ে দেখি জানলার ঘুমন্ত পর্দাকে
যেভাবে ছুঁয়ে দেখি সন্ধ্যাতারার ঘুম
একদিন সেরকম ছুঁয়ে দেবো একবার তোমাকে।

                 গাছ

           সুতনু হালদার 

গাছের প্রসঙ্গে কিছু বললেই অমাবস্যার যৌক্তিকতা
সম্পর্কে একটা প্রশ্নচিহ্ন চলে আসে অথচ প্রশ্নরা
কখনোই নির্বান্ধব হয় না, যদি অমাবস্যার কথা
বলতে হয় তাহলে জ্যোৎস্নাগুলোর অবদান
কুয়াশার খুনসুটিতে মেতে ওঠে
যেমন প্রতিটা মানবজীবনে হয়ে থাকে...
গভীর বোধের মধ্যেও অমাবস্যার কিছুটা
নিকশ কালো অন্ধকার ঢাকা থাকতে পারে
তবে গাছের সালোকসংশ্লেষে তারা একান্তই বেমানান
আর বেমানান বলেই দিনের আলোতে
সেগুলো আড্ডা মারলেও
অভিযোজিত হতে চিরকাল সময় নেয়


                   ঘেরাটোপ 

               সুতনু হালদার

         যে ঘনঘটা বুকের মধ্যে
         অরণ্যের গর্জন তোলে
        ক্ষণিকের মাধুকরী
       নদীখাতের নিষিক্ত প্লাবনে
       অনেক সময় সংসারী হয়
       সভ্যতার আসল ইতিহাস
       স্ফূটনাংক নির্ভরতায় বড্ড চপল!
       মনের কৌশিক জল নিটোল বৃষ্টিকণার
       আলিঙ্গনকে আজীবন সন্ধান করতে করতে
        সবুজের হাহাকার চিনে ফ্যালে,
        অরণ্যের নিজস্ব স্বরলিপি
        ব্রহ্মচর্যের ঘেরাটোপে প্রতিবিম্বিত

      আমি

   জ্যোতির্ময় মুখার্জি 


রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছি
হাঁটতে হাঁটতে হাঁটাগুলো সব রাস্তা হয়ে গেল
ভেতর ভেতর রাস্তারা সব, হাঁটা হচ্ছি আমি
আমাকে হাঁটা পেয়ে আমার ভেতর, রাস্তা হেঁটে গেল
হাঁটা ও রাস্তা, এই দুইয়ের দূরত্বে আমি
হাঁটতে হাঁটতে রাস্তাগুলো সব আমি হয়ে গেল

      অভ্যাস 

        রীতা রায় 

দিন অবসান হল সারাদিনের ক্লান্তিভার কাঁধে..
কাঁধের ব্যথাটাও বেড়েছে জোরদার..
জর্দার খালি শিশি থেকে এখনও সুগন্ধ বেরুচ্ছে..
বেরুচ্ছে আর মিলিয়ে যাচ্ছে ক্ষীণ ইচ্ছাশক্তি..
শক্তিদ্ভূত অনন্ত অধ্যাত্মচেতনা..
চেতনার প্রতিক্রিয়ায় দিব্যঞ্জান স্বরূপ নিত্য অভ্যাস..

  সমাজের খাদ্য

   সৌরভ ঘোষ 


নুয়ে পড়া খোলা চাল,
ভেঙে পড়া ডাল;
একরাশ পিচুটি চোখে নির্ঘুম পৃথিবী...
মরা শালিক পাখিটা যেন নড়ে ওঠে...
মায়ের দুঃখ, চাষীর চোখেও জল;
জামার হাতা গুটিয়ে সমাজ এসব খায়..
ছোটো ছেলেটাও সব জানে;
এলেবেলে হাতে সে'ও বর্ণহীন মেঘ আঁকে
আর ভেঙে দেয়...

       প্রয়োজন 

       অনুপম চক্রবর্ত্তী

আমার ফুরিয়ে আসার শেষ প্রান্তটুকু বিকেলের ক্লান্তি মাখা অবসরে স্মৃতিহীন আবহের দৈনতার চেনা অধ্যায় আর নিয়মের স্বতঃস্ফূর্ত ব্যকুলতা জুরে রাত-দিন যেভাবে ইচ্ছের বর্ণচোরা গন্ধ ফুরিয়ে অন্ধকারে তলিয়ে যায় , তার প্রতিটি মুহূর্ত নালিশের বেঁচা-কেনায় অবহেলা গন্ধের সীমা পেরিয়ে চিন্তার নোনা ধরা ভিতে এসে আছরে পড়ে । আমি চোখ মুছি , চোখ বুঁজি, চোখের আগুনে স্বপ্নের জল ফোটে, টুকরো টুকরো বাস্পের স্বীকারোক্তিতে নিভে যায় ভেতরের শবদাহ । তবুও নীরবে, নির্জনে, নিয়মের আড়ালে বেড়ে ওঠা কোন আত্মঘাতী চিন্তার চোরা কুঠুরিতে প্রতিটি রাত এসে যেভাবে ধরা দেয় ক্লান্ত বিষ্ময়ের কাছে , অবাক প্রজন্মের লালিত মুহূর্ত থেকে সবকটা প্রতিবাদী যন্ত্রনার ফসল বেড়ে ওঠে নিজের খেয়ালে । যতটা প্রয়োজন থাকে না বোঝার , যতটা প্রয়োজন থাকে ভেঙে ফেলা অতীতের কাছে , ততটা প্রয়োজন এ জীবনে আর খুঁজে পাই না ।

                 আদরের ফুল             

                   অনুপম চক্রবর্ত্তী

একটা অকারণ নিয়মের নদী টপকে অন্য নদীতে ভেসে ওঠা স্রোতের গায়ে সারাদিনের পরিশ্রমে ডুবে যাওয়া মাছের আহত কাঁটার খোঁচায় বৃষ্টির ফাটল কাহিনীর সমান্তরাল থেকে যেটুকু জল ছিটকে এসে প্রয়োজনের গায়ে লাগে , তার কাদা মাখা অস্বস্তিকর মুহূর্তের কিছু অবান্তর কৌতুহল খেয়ালহীন আবহের দৃষ্টি নালিশের ছায়াদীর্ঘ আঙুল শুকনো আদরের পাশে ভাঙচুর আপষের পোষ মানা কথারা সাজিয়ে রাখে বিকেলের পাতাঝরা ক্যানভাসে । একটা নিরুত্তাপ চেনা মুখে জোনাকীর আলোটুকু ধরে রাখা মনখারাপের জলরং তুলিতে আলতো স্বভাবসিদ্ধ আবেগের নীরব প্রতিক্রিয়া সাজিয়ে রাখা ঠান্ডা আগুনের গা ঘেঁসে প্রতিটি অগ্রায়ণ নেমে যাওয়া চোখের পাতার টুকরো কাজলে বাতাসের চেনা ডাকে যখন ভেসে ওঠে আলো , তাকে পেরিয়ে যাওয়া একটা দিগন্ত থেকে গুঁড়ো মেঘ আর ভেজা রোদের সবটুকু নিয়ে আধভেজা অক্ষরের চিহ্ন থেকে অবাক রাতের ফুরিয়ে আসা স্বপ্নগুলো জেগে থাকে কোন এক গোপন বেলার প্রতিটি নালিশে । তবুও সামঞ্জস্য মেনে চলা ফ্রেমে লতানো চাঁদের জোছ্নায় আবেদন রেখে যায় ইচ্ছের শেষটুকু ভেঙে যাওয়া অভিমানে আদরের প্রতিটি ফুল । 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৯

      ভালবাসি 

          অর্পিতা ঘোষ 

ভালবাসা কথাটা শুধু একটা অক্ষর নয়,
ভালবাসি বললেই যেন ভালবাসা হয়।
অজানা পথ দিয়ে, শহর পেড়িয়ে-
আঙুলে আঙুল জড়িয়ে
তোর সাথে যখন বেড়ায়,
তোর চোখের খুশি দেখে
মন তখন আকাশের সামিয়ানায়
বলাকার মালা হয়ে উড়ে যায়।
তোকে ছাড়া আমার জীবন ছন্দে-
বেসুরো গীতি বাজে,
পিয়াসী মন শুধু একমুঠো সুখ
তোর মাঝেই খোঁজে।
তাকাস যখন আমার দিকে
অভিসারের সাজে,
কুমারী আলোয় হয়ে যায়
চোখ লজ্জাবতীর লাজে।
আজও তোর বুকে হাত দিলে-
উষ্ণ পরশ পাই,
যেখানে আছে ভালোবাসার প্লাবন-
নিস্পাপ মনে পরিপূর্ণতায়।
তুই ছিলি, তুই আছিস, তুই ই থাকবি-
আমার মনের ফাগুয়া বাতাসে,
স্বপ্নের রঙিন ছবি হয়ে তা থাকবে-
দিগন্তের ক‍্যানভাসে।

দম্পতি 

কৌশিক ডাম

  সারারাত কাজ করে ভোররাতে বাড়ি ফিরলো জয়িতা, ক্লান্ত অবসন্ন । বাথরুমে ঢুকে শরীর পরিস্কার করছে , ঘসে ঘসে, কত ঘাম , থুথু অনেক বীর্য। মন পরিস্কার করার সাবান এখনো আবিষ্কার হয় নি, হলে একটা কিনতো। এখনো ঘুমিয়ে বাচ্চা আর বাচ্চার বাবা। জয়িতা স্নান সেরে চা বসিয়েছে, বাচ্চার বাবার ঘুম ভাঙলো। মালের আর ঘুমের নেশায় টলমল পায়ে এগিয়ে আসলো মরদ। লেডিজ ব্যাগটা খুলে টাকা গুলো গুনলো, 1200 টাকা, এবার আবার হাত ঢোকাল ব্যাগে 3 টা কন্ডম আছে। হিসেবে গরমিল , প্রতিদিন 10 টা করে কন্ডম দেয় , প্রতি কন্ডম 200 টাকা হিসেবে , সেই হিসেবে 200 কম। মাথা আগুন হয়ে উঠলো, চুলের মুঠি ধরে ওর বউ যা সেটাই বলে বললো 200 কি করলি?  জয়িতা উত্তর দেবে আবার সংসার টাও করবে, কি আশ্চর্য!

ডাগর প্রেমিকা 

  শ্যামল কুমার রায় 


তমার নাগর,আশিক আহমেদ কথা রেখেছিল। ধাপে ধাপে রিপুদের বাড়ির ভোল পাল্টে দিয়েছিল চোরাচালানকারী আশিক আহমেদ। খালি গাড়ি নিয়ে ফেরার পথে হাই রোডে মাঝেসাঝে স্বাদ বদলাতে যেত রিপু। লাম্পট্য এখন ওর ধমনীতে ধাবমান। ছেলের বদ খেয়াল বেশ টের পেয়েছিল তমা। তাই সময় থাকতে ছেলের বিয়ে দেয়ার চেষ্টা শুরু করল। বাস্তবের মাটিতে ঠোকর খাওয়া তমা ছেলে বৌ কে বাড়িতে একটা সুস্থ পরিবেশ দিতে বদ্ধপরিকর ছিল। তাই এতদিন যে নাগর দিনে দুপুরে রাতে নিত্যসঙ্গী ছিল, তার সাথে ঝগড়াঝাঁটি শুরু করেছিল। শেষে রেপ্ কেসের ভয় দেখিয়ে জাঁদরেল আহমেদ সাহেবের আসা ধাপে ধাপে কমিয়ে বন্ধ করে দিল তমা। তমার এই পরিবর্তন বেশ চোখে ঠেকেছিল রিপুর। মায়ের উপর পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রশমিত হয়ে গেল রিপুর। পঁচিশ পার হতে না হতেই বেশ দূরে রিপুর শ্বশুর বাড়ি করে দিল তমা। রিপুর স্ত্রী রিপুর চেয়ে বছর পাঁচছয়েক এর ছোট। ঘরোয়া মেয়ে। বাবার ছোট্ট ফলের স্টল। বয়স সেই সবে কুড়িতে পা দিয়েছিল। নাম স্বাতী। সঙ্গমে মহা পারঙ্গম রিপুর ফুলশয্যা বেশ রসেবশেই কাটল। চরম তৃপ্ত রিপু আর স্বাতী। রাতভোর রক্তক্ষয়ী নিরাভরণ সংগ্রামে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত অথচ তৃপ্ত রিপু - স্বাতীর তাল কাটল; যখন কাক ভোরেই তমা- 'রিপু, ওঠ। সকাল হয়ে গেছে।'- বলে ডেকে উঠল। মেজাজটা খিঁচে গেল রিপুর। বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ছিল, সামলে নিল। বিয়ের লৌকিক আচার অনুষ্ঠান বেশ ভালোভাবেই মিটল। সব কিছুই মধ্যেই কাবাবে হাড্ডির মতো শাশুড়ি মার খিটখিটে মেজাজ,স্বাতীর সব কাজে খুঁত ধরা রিপুর জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। না পারছিল বউকে কিছু বলতে, না পারছিল মাকে কিছু বলতে। অশান্তির প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছিল ওদের দাম্পত্যের উপর। এর মধ্যেই স্বাতী ভীষণ উত্যক্ত হচ্ছিল ওর শাশুড়ির নিত্য খুঁত ধরার অভ্যাসের কারণে। ধীরে ধীরে তা সহনশীলতার মাত্রা পার করতে লাগল। রোজ রাতে স্বাতীর এই অভিযোগের ঝাঁপি রিপুরও অসহ্য লাগছিল। শেষে সারাদিন খেটে এসে রিপু সকালের আনাজ কেটে দিত। সাত সকালে উঠে রাস্তার টাইম কল থেকে জল এনে দিত। এমনকি তিনজনের জামা কাপড় কেচে মেলে দিয়ে যেত। সংসারে শান্তি বজায় রাখার জন্য রিপু কত চেষ্টাই করতে লাগল। ফল হল বিপরীত। পাড়ার কাকিমা, মাসিমা, বৌদিদের কাছে ও বৌ এর ভেড়া বনে গেল। সব থেকে তাজ্জব ব্যাপার হল , এই নিন্দেমন্দ তে ওর মা, তমার প্রত্যক্ষ মদত ছিল। রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স চালাতে চালাতে অন্যমনস্ক হয়ে পরতে লাগল রিপু। একবার তো প্রাণে বেঁচে গেল বরাতের জোরে। স্বামীর কথা ভেবে স্বাতী সব মুখ বুজে সহ্য করে নেবে ঠিক করল। বাড়ির এই চাপা উত্তেজনা প্রভাবিত করল ওদের দাম্পত্য সম্পর্ককে। শরীরী সুখের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে বালিশে মুখ গুঁজে রাতে সবার অলক্ষ্যে কাঁদত স্বাতী। আর রিপুর কেমন যেন অনীহা চলে এল যৌনতার উপর। এতদিনের বহুগামী রিপু শরীরী তৃপ্তি নিতে ও দিতে ব্যর্থ হতে লাগল। ফলস্বরূপ, অশান্তি , অশান্তি আর অশান্তি।
              কিন্তু, ওর এই পৌরুষ নষ্টের কারণ খুঁজে পেতে রোগী নিয়ে যাওয়ার নাম করে একদিন  ষোড়শী গমন করল। অশান্তি মুক্ত সঙ্গসুখ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করল। নিজেকে আবিষ্কার করল রিপু। এদিকে ঘরে ফিরে দেখে স্বাতীর গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে উদ্যত ওর মা তমা। আর কালক্ষেপণ না করে ছোট হাতি ভাড়া করে নূন্যতম দরকারী জিনিস নিয়ে এক কাপড়ে স্বাতীর হাত ধরে পা বাড়াল এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।

প্রোগ্রেস

      সৌমেন সরকার  

ওরা পাঁচ বন্ধু আপার প্রাইমারী ইন্টারভিউ দিয়ে বেরিয়ে এল হতাশ হয়ে।এম.এল.এ সাহেব বলেছিলেন,সাত-আট লাখ টাকা অলরেডি জমা পরেছে সিটগুলোর জন্য।তাই টাকা না হলে চাকরী হবেনা।অবশ্য সবই হয়েছিল গোপনে।
ওদের কারও বাবা মাছ বিক্রি করে,কারও বাবা নেই।মা পরের বাড়ী কাজ করে সংসার চালায়।কেউ বা লেবার বা মুদির দোকানে থাকে অথবা অসুস্থ।ওরা পাঁচজন নিজেরা কোচিং করে টিউশন পড়িয়ে গ্র্যাজুয়েট হয়েছে।প্রত্যেকের অনার্স আছে এবং ৫০%+ মার্কস।এটাই প্রশিক্ষণ ছাড়া চাকরীর শেষ সুযোগ ছিল।প্রাইমারীতে পাঁচ লাখ টাকার কথা বলেছিল।ওদের যা অবস্তা তাতে পাঁচ হাজার টাকাও দিতে ওরা অপারক।আবার বি.এড ছাড়া এস.এস.সি ও আর দিতে পারবে না।বা কোন প্রশিক্ষণ ও নিতে পারবেনা।সে ক্ষমতা কারও নেই।সব নেতৃবৃন্দের হাতে পায়ে ধরেও কোন কাজ হলনা।
হতাশায় ভেঙে না পরে ওরা ঠিক করল বছর দুই লেবারি করবে।তারপর পাঁচজন কিছু কিছু করে টাকা জমিয়ে ব্যবসা শুরু করবে।অবশ যদি দাদারা করতে দেন...
ওরা কিছুদিন পর দেখল পুঁটি বা ভোলার মত ক্যান্ডিডেট রা সব সেজেগুঁজে স্কুলে পড়াতে যাচ্ছে।ওরা কিন্তু এখনও ইংরাজীতে পুরো অ্যাড্রেস লিখতে পারেনা...আর লিখতে গেলে অজস্র বানান ভুল করে...
              
            ★★--সমাপ্ত--★★