রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৯

তফাৎ যাও
                            পারমিতা ভট্টাচার্য্য

             তর্জনী তুলো না তুমি,ওটা তোমায় মানায় না।
            ঐ আঙ্গুলে গাঢ় ট্রিগারের দাগ,
            মনের দগদগে ঘা কে আরও খুঁচিয়ে তোলে।
           পুঁজ - রক্ত মাখা দুঃসময়,
           বায়বীয় স্মৃতি হয়ে চেপে ধরে
          আমার কলার,একটা অদৃশ্য তর্জনী
          তখন মসকরা করে আমার অস্তিত্ব নিয়ে।
          পাশবিক হাত আজ বয়ে নিয়ে চলে
          জাতির পতাকা,শূন্য দৃষ্টিতে ,
         কানে আসে শুধুই সাইরেনের উদ্ধত আওয়াজ
         যেন হুঁশিয়ারি দেয় একটাই.......
         "তফাৎ যাও,তফাৎ যাও।"

সাড়ে তিন হাত জমি

সহানুভূতি কাম্য ছিল না কখনোই,
অনুভূতিরা তাই সূক্ষ্ম আচ্ছাদন
ভেদ করে,স্ফুলিঙ্গের মত প্রকাশিত হতে চায়।
জীবনে হিসেবী হতেই হবে তার কোনো মানে নেই,
দুয়ে - দুয়ে চার যদি নাই হয়!!
তবে কি স্তব্ধ হয়ে যাবে জীবনের গতি?
হিসেবেও ভুল হয় মাঝে মাঝে
একটু বেহিসেবী হলে ক্ষতি কী?
সারা জীবন জুড়ে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকে হিসেবী দস্তখত,
কিন্তু আমাদের বরাদ্দ জমি তো সেই, সাড়ে তিন হাত।

                                প্রতিশোধ          
                     অভিজিৎ দাশগুপ্ত


এই যে মাটি থেকে উপড়ে নিচ্ছ অসহায়,
অপ্রতিবাদী শিকড়গুলোকে অনায়াসে,
মাটিতে কান পাতো শুনতে পারবে অব্যক্ত পাথর যন্ত্রণা।
একদিন আসবে
যেদিন শিকড়গুলো মাটি ছেড়ে তোমার বুকে প্রতিবাদী ঘর বাঁধবে।
তোমার রক্তে, শিরা উপশিরায়, মজ্জায়,
হাড় মাংসে টের পাবে প্রাগৈতিহাসিক অরণ্য নৈঃশব্দ্যযাপন।।

                            
                                       প্রত্যাশা.....

                                  অনুপম পাঠক


যদিও আমি বলে যাই,  আমার এই প্রেমিক হৃদয়' -
তোমাকে ফুলের দেশের নিয়ে যাব বলেছিল, একদিন ...
তবুও,  কি পেয়েছ আমায় ভালবেসে ?
শুধু পরিচয় টুকু পেয়ে মায়ায় জড়িয়েছ নিজেকে
                               - প্রতিশ্রুতি আর মিথ্যে বাগদানে।
জানি, একদিন তুমি সংসারই প্রত্যাশা করেছিলে
যার চিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারিনি বলে,
মৃত কঙ্কালে সঞ্জিবনী 
                               - আজও জমিয়ে রেখেছ অক্ষত ভাবে।
যে গভীর রাস্তা তুমি খুঁজে চলেছ
সেই রাস্তার প্রাণে কত জন্মের যন্ত্রণা
লেখা আছে তোমার পথিকৃত ইতিহাসে ।



                                      -: অনুগল্প :-  

                                    
আইটেম বোম
                                     সিদ্ধার্থ সিংহ

হিন্দি সিনেমার আইটেম গার্ল। একেবারে ঝাক্কাস মেয়ে। ওয়ার্ল্ড ট্যুরে বেরোচ্ছেন। সুইজারল্যান্ডের সব চেয়ে বড় স্টেডিয়ামে তাঁর শো। লাইফ  টেলিকাস্ট হবে চ্যানেল টু চ্যানেল। সারা পৃথিবী জুড়ে। তবু টিকিটের জন্য দাঙ্গা বেঁধে গেছে। বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ওই দিনের জন্য স্পেশাল ফ্লাইট দিচ্ছে। লোকে বলে, ডাক্তাররা নাকি এখন আর কাউকে ভায়াগ্রা প্রেসক্রাইব করেন না। বলেন, ওঁর নাচ দেখুন, তা হলেই হবে।
সব ঠিক আছে। কিন্তু সমস্যা হল, ওই শোয়ে কী পরবেন তিনি! এমন পোশাক চাই, যাতে তাঁর সমস্ত রেকর্ড ব্রেক করে যায়। উনি কল করলেন পৃথিবীখ্যাত এক ডিজাইনারকে। একটা ছোট্ট লেডিজ রুমাল দিয়ে বললেন, আমাকে এটা ড্রেস বানিয়ে দিন।
ডিজাইনার গালে হাত দিয়ে বসে পড়লেন। ভাবছেন আর ভাবছেন। মনে মনে কত কিছু কাট-ছাঁট করছেন। তাঁকে অত চিন্তাভাবনা করতে দেখে আইটেম গার্ল বললেন, কী হল? এতে হবে না?
ডিজাইনার বললেন, না না, হবে না কেন? হবে হবে। আমি ভাবছি, যে কাপড়টা বাঁচবে, সেটা দিয়ে কী বানাব!
                                      -:অনুগল্প:-
                        
                         দুই প্রকৃতি
                        কৃপান মিত্র
                 
   
 রথিনবাবু কোমায় পড়েছিলেন প্রায় দুবছর।
যখন জ্ঞান হল  কাউকেও চিনতে পারেন না।
ঘোলা চোখে শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেন। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মুখ ঘুরিয়ে নেন। রথিনবাবুর স্ত্রী এক একজনকে কাছে এনে পরিচয় করিয়ে দেন।ঘোলা চোখের কোণ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে।
       রথিনবাবুর ভরা সংসার।স্ত্রী, দুই ছেলে এবং এক মেয়ে সায়না। মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে অনেক কর্য হয়েছিল তাঁর ।বসতবাটি টাও বন্ধক রাখতে হয়েছিল। এই সমস্ত চিন্তা দিনের চব্বিশ ঘন্টা তাকে কুরে কুরে খেত ।
     একদিন বাথরুমে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেলেন তিনি। সেই থেকে কোমায়। রথীনবাবু ঘোলা চোখে তাঁর ঘরটা দেখছেন ।দেখছেন জানালার ফাঁক থেকে বাইরের প্রকৃতিকে। লেংটা গাছে কচি পাতা ধরেছে ।মাচায় লাউ ফুল দেখা যাচ্ছে ।গাঁদা ফুলের আভিজাত্য তখনও অমলিন।শালিকের ঝগড়া কান না পাতলেও দিব্যি শোনা যাচ্ছে।বসন্তদূত একটানা
ডেকেই চলেছে। সময়টা তাহলে কিছু নয়।
      রথীন বাবু ঘাড় তুলে ওঠার চেষ্টা করলে তার স্ত্রী তাকে যত্ন করে ডবল পাশ বালিশে বসালেন।           রথিনবাবু ভাল করে বাইরটা দেখে বললেন ,তাহলে কিছুই বদলায়নি । দুই প্রকৃতি এক ডোরে বাঁধা।
       বাকি কথাটা বলতে পারলেন না তিনি।তাঁর চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা জল গাল গড়িয়ে নিচে পড়লো।
                                       -:অনুগল্প:-

                        স্কুল আমার প্রথম দিন
                               আনজারুল মোল্লা  


আমি যখন শিশু , মায়ের কোল ছেড়ে একদিন দিদিমনির কাছে গেলাম শিশু শ্রেণীতে পড়ার জন্য। সেদিন মনে ছিল ভীষণ ভয়। কি যেন মনে হচ্ছিল !দিদিমণি আমাকে বকবেন নাকি মারবেন এইসব ভাবনা।কিন্তু আমি যখন শিশু শ্রেণী বা আই সি ডি এস ই পড়তে গেলাম দিদিমণি কত সুন্দর ভাবে আমাদের ছড়া বললেন শিখালেন পোড়ালেন। আমাদের কে আদর করে বোঝালেন সেদিন আর কোন ভয় ছিল না।
       দিদিমণি আমাদের সাথে নাচতে লাগলো আর ছড়া বলতে লাগলো আমি কি যে খুশি হলাম তখন ভয় কোন দিকে চলে গেল। বাড়িতে এসে মাকে বললাম খুব খুশি হয়ে আমার এই কথা শুনে মা খুবই খুশি হলেন। তখন থেকে আমি আর কোন দিন স্কুলে যেতে ভয় করতাম না ভয় জিনিস ছিল না আমার মনের মধ্যে শুধুমাত্র ছিল দিদিমনির প্রতি আর স্কুলের প্রতি আমার ভালোবাসা ফুর্তি আনন্দ। শুধু হৃদয় জুড়ে ছিল আনন্দ আর আনন্দ। স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের সাথে খেলা করতাম। সে ছিল বড় সুখের দিন।
    ক্রমে ছয় বছর ছাড়িয়ে গেলাম। এবার ভর্তি হলাম প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রথম দিনে ভীতু ভীতু অবস্থায় স্কুলে গেলাম। মাস্টার মশাই ক্লাসে ঢুকলেন এবং আমাদেরকে পোড়াতে লাগলেন। আমরা মাস্টার মশাই এর সাথে পড়তে লাগলাম। আমাকে পড়া জিজ্ঞাসা করলেন মাস্টার মশাই আমি চট করে বলে ফেললাম। মাস্টারমশাই খুশি হয়ে আমার মাথায় হাত বুলালেন আর বললেন খুব ভালো করে পড়াশোনা করো অবশ্যই একদিন তুমি ভালো হবে। সেই কথা আমার আজও মনে আছে।
                                      -:অনুগল্প:-

                         একাকীত্ব
                      রানা চ্যাটার্জী
                    
একাকীত্ব আজ প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে আপন মহিমায় বিরাজমান । আধুনিক জীবনযাত্রার সাথে ঘুণপোকার বাসার  মতোই অন্যতম  সঙ্গী হয়ে উঠেছে একাকীত্ব। ব্যস্ত জীবনে বেড়েছে মোলাকাৎ, হই হুল্লোড় , গেট টুগেদার তবুও একাকীত্বের নখর আঁচড় বসাচ্ছে,গহন মনে, বাহ্যিক আচরণে । 
আপনজনের সাথেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে সংসার জীবন তবু যেনো একটা শূন্যতা ।বড্ড ব্যস্ত জীবনে একাকীত্বের চতুর থাবা । একাকীত্বকে নির্মূল করতে,  আমরা নিজেদের ব্যস্ত রাখার শত শত চেস্টাও  করি, একাকীত্বের অন্যতম দোসর অবসাদ কে ভুলতে কতো রকম ভাবে নিজেদের  ব্যস্ত রাখার প্রচেস্টা । যে ছেলে বা মেয়েটি সারাদিনের ব্যস্ততা, পড়াশোনা কিংবা কর্মক্ষেত্রের চাপের মধ্যে মুখ গুঁজে কাজ করে চলেছে , কত দেশ বিদেশের মানুষের সাথে ইন্টারনেটে কথোপোথন । কিন্তু  যে মুহূর্তে সে একদম একাকী হয়ে নিজের সঙ্গ দেয় , অল্পেই অধৈর্য্য হয়ে ওঠে , সময় কাটতে চায়না,চিন্তা কেড়ে নেয় ঘুম ,এক রাশ অবসন্নতার পাহাড় জমে।
 একঘেঁয়েমি জীবনে মানিয়ে চলতে চলতে কখন যে, আমরা রোবট হয়ে পড়ি খেয়াল থাকে না । পুতুল দের মতো আচার আচরণ করি এই বিরাট পৃথিবীর নাট্য মঞ্চে । আমরা স্রোতে ভেসে ভেসে চলছি , পরিমিত হাসি , পরিমিত খাওয়া ,অভ্যাসে রপ্ত মানব কুলের দৈনন্দিন জীবন ধারণ একাকীত্বের ভেলায় চড়ে । 
কত হারিয়ে গেছে সে সব খেলা , পিঠের ভারী ব্যাগ আর ইস্কুলের দৈত্যাকার সিলেবাসের কল্যাণে । জানালার গরাদ ধরে জুল জুল চোখে বাচ্ছা , ফ্লাটের খাঁচা বারান্দা থেকে নিজের লোক জন , গাড়ির গতিময়তা নচেৎ টেলিভিশনে সিনচেন , নবিতা , মোটু পাতলুর চওড়া  মুখের হাসি দেখে বড়ো হয় আর ফাঁকা হলেই একাকীত্বের পিঠে সওয়ার । 
আগে যৌথ পরিবারে হই হই করে খেলা , পড়াশোনা ,যৌথ কাজকর্মে কি সুন্দর দিন গুলো কাটতো,  ছেলে মেয়েগুলো মানুষ হয়ে যেতো ঘরের মানুষদের ওপর ভরসা করে ,কোলে পিঠে চড়ে ! এখন পরিস্থিতি অনেক আলাদা । উপার্জন বেশি তবু এক সন্তান মানুষ করতেই দিশেহারা অভিভাবকগণ,তাই একাকিত্বই সঙ্গী।
                                  প্রবন্ধ
             ইংরেজি সাহিত্য ও নষ্ট কথা

                              শাবলু শাহাবউদ্দিন


বে কিছু বছর হল ইংরেজি সাহিত্যের লেকচারার কিংবা অধ্যাপকদের উপর বিভিন্ন অভিযোগ আনা হচ্ছে । তাদের বিভিন্ন চাপের মুখে ফেলে নানা রকম হেনস্থা করা হচ্ছে । এমন কী হত্যা পর্যন্ত করা হচ্ছে । এই তো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম স্যারকে হত্যা করা হল , তিনি নাকি নাস্তিক ছিলেন বলে । আসলেই কি তিনি নাস্তিক ছিলেন নাকি অন্য কিছু হাছিল করার উদ্দেশে তাকে হত্যা করা হয়েছিল?  এটা সবার জানবার কথা । এই কিছু দিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদ স্যারকে ( বর্তমান উইএসটি এর ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা) গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছিল । কিন্তু কেন ? প্রশ্ন টা সবার মনে আসার কথা । আমারও এসেছিল । পেপার পত্রিকা পড়ে বুঝতে পারলাম যে , অধ্যাপক সাহেব নাকি ক্লাস রুমে নষ্ট কথা বলতেন । নষ্ট কথা বলতে বুঝানো হয়েছে যৌনতা কিংবা সেক্স বিষয়ক কথা । 
এইবার বলি , বলুন কেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক কিংবা লেকচারার Sexual কথা বলেন ? নিশ্চয়ই কোন কারন আছে ! ধরুন আপনি চিনি খাচ্ছেন , আগে কখনও মধু পান করেন নি, তাহলে কি চিনি  খেয়ে মধুর স্বাদ বর্ণনা করতে পারবেন কিংবা মধুর গুণ কী বুঝতে পারবেন । কিংবা ধরুন আপনাকে সরিষার তেল খেতে দেওয়া হলো এবং বলা হলো যে বলুন মধুর স্বাদ কেমন ? যদি আগে কখন মধু না খেয়ে থাকেন তাহলে কি মধুর স্বাদ সম্পর্কে কিছু বলতে কিংবা  লেখতে পারবেন ? উত্তরে হয় তো আশা করি না বলবেন ।
ঠিক এমনই, ইংরেজি সাহিত্যে যেখানে মধু আছে সেখানে মধুর স্বাদ বর্ণনা করতে হয় কিংবা যেখানে চিনির স্বাদ আছে সেখানে চিনির স্বাদ বর্ণনা করতে হয় । আবার যেখানে সরিষার তেলের স্বাদ আছে সেখানে সরিষার তেলের স্বাদ বর্ণনা করতে হয় ।কারণ, ছাত্রছাত্রীদের সঠিক জ্ঞান দান করা একজন শিক্ষকের নৈতিক দায়িত্ব । তারা যদি ভ্রান্ত জ্ঞান দান করেন , তাহলে নতুন প্রজন্ম ধ্বংসের মুখে পতিত হবে । তাই তো বলা হয়, শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর ।
কোন শিক্ষক যদি সফোক্লিস এর নাটক ঈদিপাস রেক্স পড়ান , তিনি অবশ্যই বর্ণনা করবেন মায়ের সাথে ছেলের বিয়ে এবং তাদের Sexual জীবন কাহিনী । যে শিক্ষক বর্ণনা করবেন তিনি তখন আপনার (কঠোরপন্থীদের) কাছে নিশ্চয়ই নাস্তিক রূপে আত্মপ্রকাশ পাবে । আসলে কী তাই ? ঐ শিক্ষক কী নাস্তিক নাকি চরম সত্য প্রকাশ করছে । আমি ঐ সকাল কঠোরপন্থীদের বলতে চাই যে আপনারা পতিতাবৃত্তি মহিলাদের নিয়ে গবেষণা করুন,  এমণ হাজারও ঘটনা স্বাক্ষ্য পাবেন । যেখানে মা ও ছেলে জীবনের অজান্তে নষ্ট কাজ (সেক্স) করছে একে অন্যের সাথে।
ইংরেজি সাহিত্যে Sexual শব্দ ব্যবহার নিয়ে কঠোরপন্থীদের যত এলার্জি, সেই উপলক্ষে একটি কথা বলি, আপনার অবশ্যই পথ চলতে দেখবেন অমুক হারবাল , তমক হারবালে সাইনবোর্ড । সেখানে হাজারও Sexual শব্দ ভরপুর । ওখানে কেন আপনাদের এলার্জি জাগ্রত হয় না । যত এলার্জি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে কেন ? 
ধরুন হেনরি ফিল্ডিং এর উপন্যাস টম জোনস্ কোন শিক্ষক পড়াচ্ছেন, যেখানে টম নানা মহিলার সাথে প্রেমের কৌশলে দৈহিক মিলন করছে । এটা কি অবাস্তব কোন ঘটনা ? আসলেই না । এটা প্রাত্যহিক ঘটনা । গোপন সমাজ তার হাজারো স্বাক্ষি । এমন অসংখ্য ক্যানসার সমাজকে গোপনে গিলে ফেলছে । চক্ষু লজ্জা আর কত দিন চলবে ?
অবশেষে এটাই বলতে চাই যে, ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষকেরা শুধু নষ্ট কথা বলেন না, তারা সমাজ থেকে নষ্ট জিনিস দূর করতে চান । ধর্ম যেখানে শুধু ভাল প্রচার করে , সাহিত্য সেখানে নষ্ট প্রচার করে সমাজের ক্যানসার সারাতে সাহায্য করে । সাহিত্য জানে যে সমাজে ক্যানসার থাকে সে সমাজ উঠে দাঁড়াতে পারে না ।  তাই সমাজের ক্যানসার সারানোর দায়িত্ব তো ইংরেজি সাহিত্যে শিক্ষকেরাই নিয়েছেন । আশা রাখি কঠোরপন্থীদের মগজে একটু হলেও সত্য বস্তুটি প্রবেশ করবে যে, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকেরা ক্লাসে Sexual কথা বলেন না, তারা সমাজের গোপন রোগ ক্যানসারের চিকিৎসা করেন ।

শনিবার, ২৯ জুন, ২০১৯

                      অনুপম চক্রবর্ত্তী

 জন্ম : ১৯৮৬ 

জন্মস্থান : মালঞ্চা, দক্ষিন দিনাজপুর

পেশা : স্কুল শিক্ষক

শখ : লেখালেখি ও গানশোনা

প্রিয় কবি : অনেক কবির কবিতাই ভালো লাগে । নির্দিষ্ট ভাবে বলা খুব মুশকিল । 

লেখালেখি শুরু : ছোটবেলা থেকেই বিচ্ছিন্ন ভাবে । তবে ২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত লিখতে আসা । 

পত্র পত্রিকা : মধ্যবর্তী পত্রিকায় নিয়মিত ভাবে লেখালেখি করেন । এছাড়াও আনন্দ বাজার, দেশ, উনিশ-কুড়ি, স্রোত, শব্দ হরিণ এবং অনলাইন ম্যাগাজিন - দৈনিক বজ্রকন্ঠ , সাহিত্য কালচার, দহর প্রভৃতি পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত হয়েছে । 

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : তুই আমাকে যা বলবি 

বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০১৯


                 জুন সংখ্যার সূচিপত্র  

                   

  "মে সংখ্যার কবি" অনুপম চক্রবর্ত্তী


কবিতা :

             কুনাল গোস্বামী,অর্পিতা ঘোষ, রীতা রায়, অনুপম চক্রবর্ত্তী, জ্যোতির্ময় মুখার্জি, সুতনু হালদার , আবির্ভাব ভট্টাচার্য, তৈমুর খান, সৌরভ ঘোষ ।


অনুগল্প :

            কৌশিক ডাম, শ্যামল কুমার রায়,সৌমেন সরকার ।

   শুধু একখানা দ...

       কুনাল গোস্বামী 

কুয়াশার মতো জমে আছে নিকোটিনের ধোঁয়া
টলমল কলমের ডগায় বিন্দু বিন্দু কালির দাগ
কবিতার শব্দগুলো থেকে শবটুকু নিয়ে গেলে
ফেলে গেলে শুধু একখানা দ...
সেই ঘূর্ণায়মান "দ"য়ের চোরা স্রোতে
ভাসিয়ে নিয়ে গেল অতীতের মায়াবী প্রেমিক'টারে
দূরে ঐ বালুকা তটে ফেলে গেলে কেবল নেশাগ্রস্ত কবি
যে মদের সাথে আস্ত গিলে খেয়েছে প্রেমিকের আচ্ছাদন 
কবি তুমি প্রেমিক হতে চেওনা আর
ঘুলঘুলি দিয়ে মেখনা আর ভোরের একমুঠো আবীর
থাকনা প্রেম প্রেমের মতো,প্রেয়সীর বুকে জড়িয়ে
প্রেয়সী নাইবা হলো তোমার,কবিতায় থাকুক সে কবির মনের মতো হয়ে!!

         অকৃতজ্ঞ

           তৈমুর খান 

মৃত্যু ছলকাচ্ছে
                 আর্তনাদ পড়ে আছে
       রক্তে ভেজা মাটি
                                   কোন্ সকাল 
আজ ?
নিষ্ঠুর হাসাহাসির ভেতর কোথাও দাঁড়াবার জায়গা নেই
সহানুভূতি পালিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের নির্বাসনে

বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৯

       ছুঁয়ে  দেবো 

    আবির্ভাব ভট্টাচার্য 


শিশিরের মতো স্বচ্ছতায় ছুঁয়ে দেবো একবার।
প্রতিদিন কতকিছু ছুঁয়ে যাই, অবশ চেতনায়, ইচ্ছায় – অনিচ্ছায়
বাজারের থলের ভার, মেছনীর ফেরত দেওয়া ন্যাতানো দশ টাকার নোটের আর্দ্রতা
খবরের কাগজের সংক্রমণ, ওষুধের পাতার আলিঙ্গন
এমনকি কম্পিউটার কি-বোর্ডের মোহ -
এই সবকিছু পেরিয়ে এসে
ভীষণ অন্যরকম, অমলিন ছুঁয়ে দেবো তোমায়।
গভীর রাত্রে ঘুমচোখে যেভাবে ছুঁয়ে দেখি জানলার ঘুমন্ত পর্দাকে
যেভাবে ছুঁয়ে দেখি সন্ধ্যাতারার ঘুম
একদিন সেরকম ছুঁয়ে দেবো একবার তোমাকে।

                 গাছ

           সুতনু হালদার 

গাছের প্রসঙ্গে কিছু বললেই অমাবস্যার যৌক্তিকতা
সম্পর্কে একটা প্রশ্নচিহ্ন চলে আসে অথচ প্রশ্নরা
কখনোই নির্বান্ধব হয় না, যদি অমাবস্যার কথা
বলতে হয় তাহলে জ্যোৎস্নাগুলোর অবদান
কুয়াশার খুনসুটিতে মেতে ওঠে
যেমন প্রতিটা মানবজীবনে হয়ে থাকে...
গভীর বোধের মধ্যেও অমাবস্যার কিছুটা
নিকশ কালো অন্ধকার ঢাকা থাকতে পারে
তবে গাছের সালোকসংশ্লেষে তারা একান্তই বেমানান
আর বেমানান বলেই দিনের আলোতে
সেগুলো আড্ডা মারলেও
অভিযোজিত হতে চিরকাল সময় নেয়


                   ঘেরাটোপ 

               সুতনু হালদার

         যে ঘনঘটা বুকের মধ্যে
         অরণ্যের গর্জন তোলে
        ক্ষণিকের মাধুকরী
       নদীখাতের নিষিক্ত প্লাবনে
       অনেক সময় সংসারী হয়
       সভ্যতার আসল ইতিহাস
       স্ফূটনাংক নির্ভরতায় বড্ড চপল!
       মনের কৌশিক জল নিটোল বৃষ্টিকণার
       আলিঙ্গনকে আজীবন সন্ধান করতে করতে
        সবুজের হাহাকার চিনে ফ্যালে,
        অরণ্যের নিজস্ব স্বরলিপি
        ব্রহ্মচর্যের ঘেরাটোপে প্রতিবিম্বিত

      আমি

   জ্যোতির্ময় মুখার্জি 


রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছি
হাঁটতে হাঁটতে হাঁটাগুলো সব রাস্তা হয়ে গেল
ভেতর ভেতর রাস্তারা সব, হাঁটা হচ্ছি আমি
আমাকে হাঁটা পেয়ে আমার ভেতর, রাস্তা হেঁটে গেল
হাঁটা ও রাস্তা, এই দুইয়ের দূরত্বে আমি
হাঁটতে হাঁটতে রাস্তাগুলো সব আমি হয়ে গেল

      অভ্যাস 

        রীতা রায় 

দিন অবসান হল সারাদিনের ক্লান্তিভার কাঁধে..
কাঁধের ব্যথাটাও বেড়েছে জোরদার..
জর্দার খালি শিশি থেকে এখনও সুগন্ধ বেরুচ্ছে..
বেরুচ্ছে আর মিলিয়ে যাচ্ছে ক্ষীণ ইচ্ছাশক্তি..
শক্তিদ্ভূত অনন্ত অধ্যাত্মচেতনা..
চেতনার প্রতিক্রিয়ায় দিব্যঞ্জান স্বরূপ নিত্য অভ্যাস..

  সমাজের খাদ্য

   সৌরভ ঘোষ 


নুয়ে পড়া খোলা চাল,
ভেঙে পড়া ডাল;
একরাশ পিচুটি চোখে নির্ঘুম পৃথিবী...
মরা শালিক পাখিটা যেন নড়ে ওঠে...
মায়ের দুঃখ, চাষীর চোখেও জল;
জামার হাতা গুটিয়ে সমাজ এসব খায়..
ছোটো ছেলেটাও সব জানে;
এলেবেলে হাতে সে'ও বর্ণহীন মেঘ আঁকে
আর ভেঙে দেয়...

       প্রয়োজন 

       অনুপম চক্রবর্ত্তী

আমার ফুরিয়ে আসার শেষ প্রান্তটুকু বিকেলের ক্লান্তি মাখা অবসরে স্মৃতিহীন আবহের দৈনতার চেনা অধ্যায় আর নিয়মের স্বতঃস্ফূর্ত ব্যকুলতা জুরে রাত-দিন যেভাবে ইচ্ছের বর্ণচোরা গন্ধ ফুরিয়ে অন্ধকারে তলিয়ে যায় , তার প্রতিটি মুহূর্ত নালিশের বেঁচা-কেনায় অবহেলা গন্ধের সীমা পেরিয়ে চিন্তার নোনা ধরা ভিতে এসে আছরে পড়ে । আমি চোখ মুছি , চোখ বুঁজি, চোখের আগুনে স্বপ্নের জল ফোটে, টুকরো টুকরো বাস্পের স্বীকারোক্তিতে নিভে যায় ভেতরের শবদাহ । তবুও নীরবে, নির্জনে, নিয়মের আড়ালে বেড়ে ওঠা কোন আত্মঘাতী চিন্তার চোরা কুঠুরিতে প্রতিটি রাত এসে যেভাবে ধরা দেয় ক্লান্ত বিষ্ময়ের কাছে , অবাক প্রজন্মের লালিত মুহূর্ত থেকে সবকটা প্রতিবাদী যন্ত্রনার ফসল বেড়ে ওঠে নিজের খেয়ালে । যতটা প্রয়োজন থাকে না বোঝার , যতটা প্রয়োজন থাকে ভেঙে ফেলা অতীতের কাছে , ততটা প্রয়োজন এ জীবনে আর খুঁজে পাই না ।

                 আদরের ফুল             

                   অনুপম চক্রবর্ত্তী

একটা অকারণ নিয়মের নদী টপকে অন্য নদীতে ভেসে ওঠা স্রোতের গায়ে সারাদিনের পরিশ্রমে ডুবে যাওয়া মাছের আহত কাঁটার খোঁচায় বৃষ্টির ফাটল কাহিনীর সমান্তরাল থেকে যেটুকু জল ছিটকে এসে প্রয়োজনের গায়ে লাগে , তার কাদা মাখা অস্বস্তিকর মুহূর্তের কিছু অবান্তর কৌতুহল খেয়ালহীন আবহের দৃষ্টি নালিশের ছায়াদীর্ঘ আঙুল শুকনো আদরের পাশে ভাঙচুর আপষের পোষ মানা কথারা সাজিয়ে রাখে বিকেলের পাতাঝরা ক্যানভাসে । একটা নিরুত্তাপ চেনা মুখে জোনাকীর আলোটুকু ধরে রাখা মনখারাপের জলরং তুলিতে আলতো স্বভাবসিদ্ধ আবেগের নীরব প্রতিক্রিয়া সাজিয়ে রাখা ঠান্ডা আগুনের গা ঘেঁসে প্রতিটি অগ্রায়ণ নেমে যাওয়া চোখের পাতার টুকরো কাজলে বাতাসের চেনা ডাকে যখন ভেসে ওঠে আলো , তাকে পেরিয়ে যাওয়া একটা দিগন্ত থেকে গুঁড়ো মেঘ আর ভেজা রোদের সবটুকু নিয়ে আধভেজা অক্ষরের চিহ্ন থেকে অবাক রাতের ফুরিয়ে আসা স্বপ্নগুলো জেগে থাকে কোন এক গোপন বেলার প্রতিটি নালিশে । তবুও সামঞ্জস্য মেনে চলা ফ্রেমে লতানো চাঁদের জোছ্নায় আবেদন রেখে যায় ইচ্ছের শেষটুকু ভেঙে যাওয়া অভিমানে আদরের প্রতিটি ফুল । 

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৯

      ভালবাসি 

          অর্পিতা ঘোষ 

ভালবাসা কথাটা শুধু একটা অক্ষর নয়,
ভালবাসি বললেই যেন ভালবাসা হয়।
অজানা পথ দিয়ে, শহর পেড়িয়ে-
আঙুলে আঙুল জড়িয়ে
তোর সাথে যখন বেড়ায়,
তোর চোখের খুশি দেখে
মন তখন আকাশের সামিয়ানায়
বলাকার মালা হয়ে উড়ে যায়।
তোকে ছাড়া আমার জীবন ছন্দে-
বেসুরো গীতি বাজে,
পিয়াসী মন শুধু একমুঠো সুখ
তোর মাঝেই খোঁজে।
তাকাস যখন আমার দিকে
অভিসারের সাজে,
কুমারী আলোয় হয়ে যায়
চোখ লজ্জাবতীর লাজে।
আজও তোর বুকে হাত দিলে-
উষ্ণ পরশ পাই,
যেখানে আছে ভালোবাসার প্লাবন-
নিস্পাপ মনে পরিপূর্ণতায়।
তুই ছিলি, তুই আছিস, তুই ই থাকবি-
আমার মনের ফাগুয়া বাতাসে,
স্বপ্নের রঙিন ছবি হয়ে তা থাকবে-
দিগন্তের ক‍্যানভাসে।

দম্পতি 

কৌশিক ডাম

  সারারাত কাজ করে ভোররাতে বাড়ি ফিরলো জয়িতা, ক্লান্ত অবসন্ন । বাথরুমে ঢুকে শরীর পরিস্কার করছে , ঘসে ঘসে, কত ঘাম , থুথু অনেক বীর্য। মন পরিস্কার করার সাবান এখনো আবিষ্কার হয় নি, হলে একটা কিনতো। এখনো ঘুমিয়ে বাচ্চা আর বাচ্চার বাবা। জয়িতা স্নান সেরে চা বসিয়েছে, বাচ্চার বাবার ঘুম ভাঙলো। মালের আর ঘুমের নেশায় টলমল পায়ে এগিয়ে আসলো মরদ। লেডিজ ব্যাগটা খুলে টাকা গুলো গুনলো, 1200 টাকা, এবার আবার হাত ঢোকাল ব্যাগে 3 টা কন্ডম আছে। হিসেবে গরমিল , প্রতিদিন 10 টা করে কন্ডম দেয় , প্রতি কন্ডম 200 টাকা হিসেবে , সেই হিসেবে 200 কম। মাথা আগুন হয়ে উঠলো, চুলের মুঠি ধরে ওর বউ যা সেটাই বলে বললো 200 কি করলি?  জয়িতা উত্তর দেবে আবার সংসার টাও করবে, কি আশ্চর্য!

ডাগর প্রেমিকা 

  শ্যামল কুমার রায় 


তমার নাগর,আশিক আহমেদ কথা রেখেছিল। ধাপে ধাপে রিপুদের বাড়ির ভোল পাল্টে দিয়েছিল চোরাচালানকারী আশিক আহমেদ। খালি গাড়ি নিয়ে ফেরার পথে হাই রোডে মাঝেসাঝে স্বাদ বদলাতে যেত রিপু। লাম্পট্য এখন ওর ধমনীতে ধাবমান। ছেলের বদ খেয়াল বেশ টের পেয়েছিল তমা। তাই সময় থাকতে ছেলের বিয়ে দেয়ার চেষ্টা শুরু করল। বাস্তবের মাটিতে ঠোকর খাওয়া তমা ছেলে বৌ কে বাড়িতে একটা সুস্থ পরিবেশ দিতে বদ্ধপরিকর ছিল। তাই এতদিন যে নাগর দিনে দুপুরে রাতে নিত্যসঙ্গী ছিল, তার সাথে ঝগড়াঝাঁটি শুরু করেছিল। শেষে রেপ্ কেসের ভয় দেখিয়ে জাঁদরেল আহমেদ সাহেবের আসা ধাপে ধাপে কমিয়ে বন্ধ করে দিল তমা। তমার এই পরিবর্তন বেশ চোখে ঠেকেছিল রিপুর। মায়ের উপর পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রশমিত হয়ে গেল রিপুর। পঁচিশ পার হতে না হতেই বেশ দূরে রিপুর শ্বশুর বাড়ি করে দিল তমা। রিপুর স্ত্রী রিপুর চেয়ে বছর পাঁচছয়েক এর ছোট। ঘরোয়া মেয়ে। বাবার ছোট্ট ফলের স্টল। বয়স সেই সবে কুড়িতে পা দিয়েছিল। নাম স্বাতী। সঙ্গমে মহা পারঙ্গম রিপুর ফুলশয্যা বেশ রসেবশেই কাটল। চরম তৃপ্ত রিপু আর স্বাতী। রাতভোর রক্তক্ষয়ী নিরাভরণ সংগ্রামে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত অথচ তৃপ্ত রিপু - স্বাতীর তাল কাটল; যখন কাক ভোরেই তমা- 'রিপু, ওঠ। সকাল হয়ে গেছে।'- বলে ডেকে উঠল। মেজাজটা খিঁচে গেল রিপুর। বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ছিল, সামলে নিল। বিয়ের লৌকিক আচার অনুষ্ঠান বেশ ভালোভাবেই মিটল। সব কিছুই মধ্যেই কাবাবে হাড্ডির মতো শাশুড়ি মার খিটখিটে মেজাজ,স্বাতীর সব কাজে খুঁত ধরা রিপুর জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। না পারছিল বউকে কিছু বলতে, না পারছিল মাকে কিছু বলতে। অশান্তির প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছিল ওদের দাম্পত্যের উপর। এর মধ্যেই স্বাতী ভীষণ উত্যক্ত হচ্ছিল ওর শাশুড়ির নিত্য খুঁত ধরার অভ্যাসের কারণে। ধীরে ধীরে তা সহনশীলতার মাত্রা পার করতে লাগল। রোজ রাতে স্বাতীর এই অভিযোগের ঝাঁপি রিপুরও অসহ্য লাগছিল। শেষে সারাদিন খেটে এসে রিপু সকালের আনাজ কেটে দিত। সাত সকালে উঠে রাস্তার টাইম কল থেকে জল এনে দিত। এমনকি তিনজনের জামা কাপড় কেচে মেলে দিয়ে যেত। সংসারে শান্তি বজায় রাখার জন্য রিপু কত চেষ্টাই করতে লাগল। ফল হল বিপরীত। পাড়ার কাকিমা, মাসিমা, বৌদিদের কাছে ও বৌ এর ভেড়া বনে গেল। সব থেকে তাজ্জব ব্যাপার হল , এই নিন্দেমন্দ তে ওর মা, তমার প্রত্যক্ষ মদত ছিল। রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স চালাতে চালাতে অন্যমনস্ক হয়ে পরতে লাগল রিপু। একবার তো প্রাণে বেঁচে গেল বরাতের জোরে। স্বামীর কথা ভেবে স্বাতী সব মুখ বুজে সহ্য করে নেবে ঠিক করল। বাড়ির এই চাপা উত্তেজনা প্রভাবিত করল ওদের দাম্পত্য সম্পর্ককে। শরীরী সুখের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে বালিশে মুখ গুঁজে রাতে সবার অলক্ষ্যে কাঁদত স্বাতী। আর রিপুর কেমন যেন অনীহা চলে এল যৌনতার উপর। এতদিনের বহুগামী রিপু শরীরী তৃপ্তি নিতে ও দিতে ব্যর্থ হতে লাগল। ফলস্বরূপ, অশান্তি , অশান্তি আর অশান্তি।
              কিন্তু, ওর এই পৌরুষ নষ্টের কারণ খুঁজে পেতে রোগী নিয়ে যাওয়ার নাম করে একদিন  ষোড়শী গমন করল। অশান্তি মুক্ত সঙ্গসুখ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করল। নিজেকে আবিষ্কার করল রিপু। এদিকে ঘরে ফিরে দেখে স্বাতীর গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে উদ্যত ওর মা তমা। আর কালক্ষেপণ না করে ছোট হাতি ভাড়া করে নূন্যতম দরকারী জিনিস নিয়ে এক কাপড়ে স্বাতীর হাত ধরে পা বাড়াল এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।

প্রোগ্রেস

      সৌমেন সরকার  

ওরা পাঁচ বন্ধু আপার প্রাইমারী ইন্টারভিউ দিয়ে বেরিয়ে এল হতাশ হয়ে।এম.এল.এ সাহেব বলেছিলেন,সাত-আট লাখ টাকা অলরেডি জমা পরেছে সিটগুলোর জন্য।তাই টাকা না হলে চাকরী হবেনা।অবশ্য সবই হয়েছিল গোপনে।
ওদের কারও বাবা মাছ বিক্রি করে,কারও বাবা নেই।মা পরের বাড়ী কাজ করে সংসার চালায়।কেউ বা লেবার বা মুদির দোকানে থাকে অথবা অসুস্থ।ওরা পাঁচজন নিজেরা কোচিং করে টিউশন পড়িয়ে গ্র্যাজুয়েট হয়েছে।প্রত্যেকের অনার্স আছে এবং ৫০%+ মার্কস।এটাই প্রশিক্ষণ ছাড়া চাকরীর শেষ সুযোগ ছিল।প্রাইমারীতে পাঁচ লাখ টাকার কথা বলেছিল।ওদের যা অবস্তা তাতে পাঁচ হাজার টাকাও দিতে ওরা অপারক।আবার বি.এড ছাড়া এস.এস.সি ও আর দিতে পারবে না।বা কোন প্রশিক্ষণ ও নিতে পারবেনা।সে ক্ষমতা কারও নেই।সব নেতৃবৃন্দের হাতে পায়ে ধরেও কোন কাজ হলনা।
হতাশায় ভেঙে না পরে ওরা ঠিক করল বছর দুই লেবারি করবে।তারপর পাঁচজন কিছু কিছু করে টাকা জমিয়ে ব্যবসা শুরু করবে।অবশ যদি দাদারা করতে দেন...
ওরা কিছুদিন পর দেখল পুঁটি বা ভোলার মত ক্যান্ডিডেট রা সব সেজেগুঁজে স্কুলে পড়াতে যাচ্ছে।ওরা কিন্তু এখনও ইংরাজীতে পুরো অ্যাড্রেস লিখতে পারেনা...আর লিখতে গেলে অজস্র বানান ভুল করে...
              
            ★★--সমাপ্ত--★★

মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯


              মে সংখ্যা যাদের লেখা দ্বারা সমৃদ্ধ



 কবিতা:-
                 আবদুস সালাম, দেবযানী বসু, অনুপম চক্রবর্ত্তী,
               অনুপ মন্ডল, শিবাশিস দত্ত, সুপ্রীতি বর্মন, সৌরভ বর্ধন,                      আরিয়ান প্রিয়স পাল, জ্যোতির্ময় মুখার্জি, রবিন বনিক,                      চিত্তরঞ্জন গিরি, দেবব্রত রায়, জীবন রাজবংশী,                                  সৌরভ ঘোষ, কৌশিক চক্রবর্ত্তী, চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় ।
গদ্য:-
                    অনুপম চক্রবর্ত্তী
গল্প:-
                    সৌমেন সরকার, বিনয় ভট্টাচার্য্য,পারমিতা ভট্টাচার্য্য



                    মে দিবসের চিত্রকল্প
                                           আব্দুস সালাম

রাক্ষসের  দশমুখ থেকে  বেরিয়ে আসছে  আগুনের হলকা
পুড়ে মরছে  বিশ্বপ্রহসনময় মে দিবসের প্রজাপতি
বহুজাতিক মানচিত্রে আঁকা সুদ কষা পাটিগণিত
অনাহার, অর্ধাহার,অচিকিৎসায় ধুঁকছে অগুনতি -পা
অভিজ্ঞ শকুনের চোখ টর্চের মতো জ্বলে
ফেরেশতারাও মাতোয়ারা হয় মে দিবসের গানে
পর্দার আড়ালে কারা যেন চাবুক হাতে রচনা করাচ্ছে শ্রমদিবসের সংবিধান
লোনা ঘামে তৈরী হয় সভ‍্যতার গন্ধধূপ
পৃথিবীর যুপকাষ্টে ছাঁটা যায় শ্রমিকের ডানা।


                                       নখের আঁচড়
                             অনুপম চক্রবর্তী

                            রোদ স্নানে বিকেল উদাসী হয়
                           ভেতরের গন্ধ বাস্প জুরে ,
                           ফুরিয়ে আসে সব সমান্তরাল ।
                          প্রতিটি সম্ভাবনার গা ঘেঁসে
                          অনেক ভাঙচুর থাকে -
                          নিয়ম মাফিক আলাপচারিতায় । 
                          আঁচলের শূন্যতায় বাঁধা টুকরো
                         মাংসাশী আবেগের মত ,
                         নখের আঁচড়ে ক্ষত হয় অন্ধকার । 


                                     রবিন বণিক

                          কবির রক্ত

          তারপর একটু একটু করে কবির রক্ত দিয়ে
         জোড়া দিয়ে যাচ্ছ রোদ—
         প্রত্যাশা করিনি,প্রকাশ্যেও বলিনি
        যারা ফেলে রেখে গেছে রুগ্ন অন্তরীক্ষ—
        তখনও জন্ম হয়নি চাঁদের
       যে অতীত সামনে এসে দাঁড়িয়েছে নতমস্তকে
       তাকে বলো আর কিছু না হোক– কবির রক্তে
       উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একশো যুবতী গ্রাম
       কথার কথা সাজিয়ে ওরা আকাশ ভেজায় জলে
      কবির রক্তে পাতা ভিজিয়ে রাখছে গাছ—


                             
পোড়ামাটির গাছ

হাঁটতে হাঁটতে কবিতার মাঝপথে এসে একদিন
চোখে পড়লো এক উঁচু পাথর, তাতে লেখা ছিল
যা কিছু পুড়ে যায় তা আমার জলরঙ—
বুঝিনি— আসলে আমার পুড়ে যাবার মতো
কিছুই ছিল না, একটু একটু করে ভীষণ ছায়া
নিভৃতে পুড়ে পুড়ে পাথর হয়েছিল , কাঁদতে পারিনি
সেদিন আমার মা–র বুকে কোনো নদী ছিল না
একটা একটা করে সমস্ত নৌকো উল্টে পড়েছিল
নিঃসঙ্গ আঁচলে, বিস্তীর্ণ উঠোন জুড়ে ছিল শীতের ইতিহাস
পিতামহের ঘরে জলরঙের কোনো উদ্ভিদ ছিল না
বাবার পুরোনো আসবাব ঘেঁটে জানতে পারি সেখানেও
পোড়াবার মতো কোনো কৃতজ্ঞতা ছিল না, কোনো
উপত্যকা রঙের মৃদঙ্গ ছিল না—
আসলে
সব ছায়াপথের শেষে অপেক্ষা করে থাকে পোড়ামাটির গাছ—



                                    শিবাশিস দত্ত

                                           ঈশ্বরীয়

এ কোন জোনাকিসন্ধ্যা....মোহফুল ফোটার পর আবছা আলো ঘিরে থাকে কাচপোকার দল... বহ্নিমান অতীত থেকে নেমে আসে সিভিলাইজড সন্তাপ ! 
অস্তি আর নাস্তির মাঝে যে জটিল বিভাবনা, কিংবা দেহাতি ভাষার কোনো তাজ্জব স্বপ্ন-- এ কোন অনঙ্গ অমৃতাশন? কাঠকয়লায় আঁকা দেবীমুখ ভুলে গেছো, নির্বাণের আবেশ কিংবা অনুরাগে পথভ্রষ্ট হলে বুঝি !
তরল ছায়ায় টানা ঘোড়ামুখ উত্তোলিত হলে নিওলিথ যুগের ভাবাবেগ জেগে ওঠে। তূষানলে দগ্ধ হয় অরুন্তূদ প্রেম, সংবিতের কানাকড়ি নিয়ে গোল বাধে।
জড়ভরতের দেশে ঘুমন্ত কবি-লেখকদের নাসিকাগর্জন শুনি, মশানের কম্প্র আলোর প্রচ্ছদ দেখে ভালুকের চোখে জল আসে। গানের ভেতর শাব্দিক দুর্ঘটনার আবহ রচিত হয়, বিশ্বাসের খুদকুড়ো নিয়ে বসে থাকে পরাণের মা। রাত গভীর হলে কপালের টিপ খসে পড়ে, জলে মুখ ঢাকে নিস্তনী বনিতা।
***********
                   আত্মজ্ঞান

আঁধারের বুক চিরে নেমে আসে অনিবার্য শূন্যতা
মুঠোভর্তি দেহতাপ নিয়ে হেঁটে যায় অভুক্ত রমণী
অস্থিরতা আর অপূর্ণতার মাঝে যা কিছু ভিস্যুয়াল
তা থেকে তুলে নাও ব্রেকাপের রং, অপরিণত মৃত্যুর জটিল নকশা।
নির্দিষ্ট স্নেহসুখ নিয়ে বেড়ে ওঠে মায়াজল,
সবুজ রঙের পাখি, নক্ষত্রপ্রেমের পূর্বরাগ।
স্বপ্ন কিম্ভুতকিমাকার হতে পারে
গাছেদের শয্যা ভেবে বাঘছাল পাতি
বনকপোতের ভীড়, কবচকুণ্ডল হারিয়ে ফেলার পর
সুফিদের সিলসিলা ঘুরে জেনে নিই আত্মজ্ঞান কাকে বলে।
আবে কোন শালা আমার কী করবে বে
আমি এখন এ শহরের আঁভাগার্দদের দলে।

শুক্রবার, ১৭ মে, ২০১৯


              মে সংখ্যা যাদের লেখা দ্বারা সমৃদ্ধ



 কবিতা:-
                 আবদুস সালাম, দেবযানী বসু, অনুপম চক্রবর্ত্তী,
               অনুপ মন্ডল, শিবাশিস দত্ত, সুপ্রীতি বর্মন, সৌরভ বর্ধন,                      আরিয়ান প্রিয়স পাল, জ্যোতির্ময় মুখার্জি, রবিন বনিক,                      চিত্তরঞ্জন গিরি, দেবব্রত রায়, জীবন রাজবংশী,                                  সৌরভ ঘোষ, কৌশিক চক্রবর্ত্তী, চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় ।
গদ্য:-
                    অনুপম চক্রবর্ত্তী
গল্প:-
                    সৌমেন সরকার, বিনয় ভট্টাচার্য্য,পারমিতা ভট্টাচার্য্য

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০১৯


                                 দেবযানী বসু



জ্বর জয়ন্তী

প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁড়িকাঠ
মালাবদল ঘটে যায় আর রজত জয়ন্তী
বার করে আনি তাঁর দাঁতের ফাঁক দিয়ে
পোড়া গির্জা নোত্রদোম
উঠোনের বাঘিনীর লেজ পোড়ে ধাপে ধাপে
তাঁর কবিতা পড়ি গভীর লাপিস লাজুলি
ফুটকি ফেলে ফেলে
ভালোবাসার উঠোনে কাঠবিড়ালিদের ঘাসফুল চর্চা
মেলে ধরা ছাতার তাপে সেঁকে নিচ্ছি ছোট্ট জ্বর
*********
শুক্র মায়া
যে কোনো বিশ্বাসের বাইরে আসলে শুক্রবার ঝলমল করে ওঠে। পোড়ো বাড়ির নিঃশ্বাসে নবরত্ন কুল কুল। বিশ্বাসের বাইরেটা সহ্য করা যায় পঞ্চাশ ডিগ্ৰি সেলসিয়াসে। আমাদেরকে ভয়াবহ বোঝানো হয়। কতো কতো দীর্ঘ অতীত নিজের আবহাওয়া তৈরি করে নেয়‌। এগিয়ে চলেছে গপ্পুড়ে অফিস। খুব দ্রুত ইচ্ছেগুলো পিকু করে নাও শরীরে। শুক্রমায়া বুঝে নাও।এ বিষয়ে হাঁড়িকাঠ নতুন কোনও.... 


                           অনুপ মণ্ডল
                          

                                               হ্রসস্বর
ডাকিনি তন্ত্রের ললন্তিকা স্তনকলায় বিষ ছিল না,দুঃখও ঝরেনি
অল্প জলে আঁশটে গন্ধের মতো মদ বসেছিল হাঁটু মুড়ে
রোদের উঠোনে ভালোবাসা উলকো মাছের মতো লাফায়
তোমার রচিত দুপুরের নির্জনতা  ভালো করেই চিনে নিয়েছি
                                   হ্রস্বস্বরে পেঁচিয়ে  ছিল মগ্ন দাঁড়াস
        পাড়ার কনিষ্ঠতম বেশ্যাকেও
   আমি তার মায়ের কথা জিজ্ঞেস করতে লজ্জা পেয়েছি।জানি
      আমারই মতো তারও একটা উল্টো জামা পরা মহাকাশ আছে।

                                          
বিবাহ
    অতিরিক্ত নীলের আকাঙ্ক্ষায় আপনা থেকে সেেও কাছে  আসেে
        আয়নার মতো ভালোবাসা হয়।আপন মনে কথা বলে স্বচ্ছতা
                ক্রমে আলো নিভে আসে
     অন্ধত্ব সম্পূর্ণ হয়ে এলে একদিন বিবাহ উৎসব
     একদিন কথাকলি কলাবৃত্ত তো আর একদিন
     সব  আলো নিভিয়ে চিিরচেনা মহাকাশের পরিক্রমণশীল ঝড়।

                                    সুপ্রীতি বর্মন


মৌচাক

শীর্ণকায় মরাল শরীর বুক দিয়ে হাঁটে
রুক্ষসূক্ষ বসবাস ইমন কল্যান
গর্ভবতী ফুলের শুক্রাণুর শোকে।।
সন্যাসী দুপুরে ঢুলঢুল চোখে
দুরন্ত উঠানামা শ্বাস ভাদর বৌয়ের আচরণের ভাঁজে।।
আজানুলম্বিত অতলান্ত দৃষ্টি মাধুকরীর
লজ্জাশীলা অধিবাস মৌচাক ভাঙা গৃহদস্যু
অলস আজানুলম্বিত দীর্ঘকায় ক্যালেন্ডার আঁচল
গতানুগতিক ধান্ধায় মুখ গুঁজে দোহন দুগ্ধবতী গাভী।।
ফর্দ করা পাতায় শিরার বাকল ঘষে মুখশুদ্ধি।।
ডেইলি সোপে অতিরঞ্জিত সাতকাহন পুরুষ নারী
হেলতে দুলতে গরুর গাড়ির অগ্রগতির চাকা
সমান্তরাল কর্ষণে মধ্যবর্তী ক্ষুধার ফাঁকে।।
********

ব্যঙ্গার্থ জীবন

ব্যঙ্গার্থ জীবনের মধ্যযুগীয় স্তম্ভ অনেকটা মাতৃবৎসল মেরুদন্ড অপলকা 
তোমার ক্ষয়ে যাওয়া বৈভবের মক্ষীরানী অহেতুক ঘ্যান ঘ্যান বাবুয়ানীর চটুল স্রোত
যৌনগন্ধী ফাঁদে তোমার চড়া সুদের সস্তা প্রেক্ষাগৃহ আড়মোড়া ভাঙা ক্লিভেজ রোদে বিছানার অভয়ারণ্যে
ব্যাকক্লিপে আঁটা যুবতী বাৎসল্য তোমার দীঘল চোখের সোহাগ রস উন্নাসিক ক্ষুন্নিবৃত্তি 
নাভিনমনে তোমার উত্থিত শ্বাসে উপপাদ্য কামার্ত শীৎকারে তোমার হাভাতে জিভে মহাকালের প্রলয় নাচনে প্রেমিকের জন্মদাগ
উত্তুঙ্গ স্তনে তোমার আড়চোখে সমুদ্র শোষণ অগস্ত্যের পুরুষ্টু কমন্ডুলে শেষনাগ ফণীর রতিদগ্ধ মণির কবচে প্রেতযোনির নাদান ঘাট।


                                      বহুগামী
                                  সৌরভ বর্ধন


                  শীতকালে শুধু পায়ের পাতা
                 ডোবাতে পারবে ভেবে       হাত বাড়াও
                ওই আগুনও ধোঁয়ায় উড়বে কিছু পাখি
                তাদের কি বাসা নেই
               নাকি গিলেছে সবই কৃষ্ণগহ্বর
              এসময় তারাদের ঠোঁট পুড়ে গ্যাছে ভেবে
              হাত বাড়াও
              কোথাও মরু গোলাপ নেই , কিচ্ছু নেই ভেবে
              হাতের আলনায় সাজিয়ে রাখো মাংসমজ্জা
              ধমনী লোম আদর করো
                                          এই আদর-কফিনে
            শেষ পেরেক পুঁতবে দাঁত ও তার সহযোগীরা
             আমি অপেক্ষা করো
            তুমি হাত বাড়াচ্ছি গরম বুকে, এখন শীতকাল
           শীতকাল বহুগামী হতে চায় না, আমিও তাই
          চেয়ে চেয়ে আজ আমাকেও উদভ্রান্ত বলা যায়