১০ এপ্রিল ২০২০ শুক্রবার
রোজকার ন্যায় আমার চিলেকোঠার ছোট্ট ঘরে সকালের রোদের উষ্ণতা আসতেই ঘুম ভেঙে গেল। শুয়ে থাকলাম বেশ কিছুক্ষণ , তার পরেও। আকাশ-পাতাল ভাবলাম। ঘরের পাশের দেবদারু গাছে ততক্ষণে পাখিদের সভা বসেছে। তারা নিজেদের মধ্যে গল্প করতে ব্যস্ত, দুটো পাখি রীতিমতো ঝগড়া করছে সেই সাত সকালেই। কাচের জানালা খুললেও তারা আমাকে মোটেও তোয়াক্কা করল না। গ্রাহ্য করলো না আমার উপস্থিতি। আমি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে লাগলাম। অধিকাংশই শালিখ পাখি। ধূসর রঙের পাখি ও ছিল বেশ ক' টা। ওদের গা জোয়ারিটাই একটু বেশি। কয়েকটা কাক এসে এই আলোচনায় যোগদান করতে চাইলেও বাকিরা মোটেও পাত্তা দিল না। ইতিমধ্যে কোত্থেকে একটা কাঠঠোকরা উড়ে এসেছে। এদের দলে সে রীতিমত বেমানান। উপায় না পেয়ে ছুটে এলো আমার কাঁচের জানলার কাছেই। সতর্ক চোখ আর ধারালো ঠোঁটে রীতিমতো যোদ্ধা পাখি বলে মনে হচ্ছিল। পাখিগুলোর কোন তাড়া নেই। ব্যস্ততা নেই জীবনে। বেশ লাগছিল। করোনা নিয়ে ভাবনা নেই কোন। জানেই না এসব সম্বন্ধে। আমারও তাড়া নেই আজ। তাই ওদের সাথে কাটিয়ে দিলাম অনেকক্ষণ। সারাদিন যখন এসেছি ঘরে, দেখেছি দেবদারু গাছে কিছু না কিছু পাখি ঠিক আছে। গোটা বিকেল জুড়ে দুটো পাখি মনের সুখে গান গাইলো। ভাষা বুঝতে না পারলেও, সেই সুরে যে প্রাণের ছোঁয়া আছে আমার বুঝতে বাকী নেই। সন্ধ্যে হলে, ঝুপ করে দেবদারু গাছটা একা হয়ে গেল। আমিও। এখন শুধু দেবদারু গাছ আর আমি। আমি আর দেবদারু গাছ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন