সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৯


                            অনুতাপের আগুন  
                        ডঃ রমলা মুখার্জী
  
   ড় কাল্পনিক আর উদার পরাগকে  রূপসার বড় ভালো লাগে।পড়াশোনায় বেশ ভালো,সবাইকে বেশ সহযোগিতাও করে।ইংরাজী অনার্সে ভালো ফল করে পরাগ ভর্তি হয়েছে এম.এতে।রূপসাও একই সংগে পড়ে।
     রূপসার ভালো লাগা ক্রমশই ভালোবাসায় পরিণত হল পরাগের সাথে কিছু অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশনের সময়ে।অসাধারণ আবৃত্তি করে পরাগ,রূপসা পরাগের প্রেমে একেবারে পাগল হয়ে উঠল।বড়লোকের খামখেয়ালী মেয়ে,তাই  পরাগ রূপসাকে এড়িয়ে চললেও শেষ পর্যন্ত রূপসার পাগলামিতে ধরা দিয়ে বসল।এম এতে দুর্দান্ত রেজাল্ট করে,নেট পরীক্ষায় ভালো ফল করে পরাগ গবেষণা করতে শুরু করল।কিন্তু রূপসা আর ধৈর্য্য ধরতে পারল না,দুম করে একদিন পাকাপাকিভাবে চলে এল পরাগের কাছে।পরাগের গবেষণা শেষে অধ্যাপনা করার ইচ্ছে,আর তখনই বিয়ের কথা ভাবত।কিন্তু কি করবে,রূপসার বাড়িতে নাকি বিয়ের জন্য রোজই কোন না কোন পাত্রপক্ষ আসছে।একজায়গায় তো প্রায় ঠিকঠাক।মধ্যবিত্ত পরাগের সাথে বিয়ে রূপসার বাড়ি থেকে দেবে না।
    বিধবা মা রমাদেবীকে নিয়ে সুখের সংসার পরাগের। মায়ের পেনশন আর তার  ফেলোশিপের টাকায় ভালোভাবেই চলে যায়, প্রাচুর্য না থাক শান্তি তো আছে।কিন্তু রূপসা আসার কিছু মাস পর থেকেই সেই মহাশান্তির সংসারে জ্বলল অশান্তির আগুন।
   রূপসার দামী দামী পোশাক আর বিউটি পারলারের ঠেলায় পরাগ একেবারে নাজেহাল হয়ে পড়ল।
রূপসারও ততদিনে মোহভঙ্গ হয়েছে,ধনী ব্যবসাদার অনলের সাথে ঘর বাঁধল রূপসা।
    পরাগ অধ্যাপক হয়েছে,তবুও বিয়ে করছে না।একটা কিসের প্রতীক্ষায় সে দিন গোনে। রমাদেবী বিয়ের কথা পাড়লেই পরাগ বড় রেগে যায়,এর কারণ কি কিছুই রমাদেবী বুঝে উঠতে পারেন না,তাই আর বেশি জোর করেন না।
     প্রবল শীতের এক ঝড়-বৃষ্টির  রাতে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার মত এসে হাজির হল রূপসা। সারা শরীরে ক্ষত,অনলের অত্যাচারের চিহ্ন।রমাদেবীর প্রবল আপত্তি উপেক্ষা করেও পরাগ রূপসাকে ঠাঁই দিল।অনুতাপের আগুনে দগ্ধ রূপসা এখন খাঁটি সোনা।

কোন মন্তব্য নেই: